সরকারি চাকরিবিধি ভেঙে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে গিয়ে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের অভিযোগ উঠেছে বগুড়ার শেরপুর পৌরসভার সচিব ইমরোজ মুজিবের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার (১৯মে) বিকেলে শহর বিএনপির নেতা ও পৌরসভার নয় নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফিরোজ আহমেদ জুয়েলের সঙ্গে ঢাকায় গিয়ে তিনি এই পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। এরপর ওই বিএনপি নেতা নিজেই পৌরসভার সচিবকে নিয়ে জিয়ার মাজারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের ছবি তার নিজস্ব আইডিতে পোস্ট করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ফেসবুক) ছড়িয়ে দেন। একপর্যায়ে রোববার (২২মে) এই ছবিটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এনিয়ে শহরজুড়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। তিনি একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়ে কীভাবে বিএনপি নেতাকর্মীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পৌরসভার দাপ্তরিক কাজ নিয়ে ঢাকায় যান পৌরসভার সচিব ইমরোজ মুজিব। সঙ্গে ছিলেন পৌরসভার কাউন্সিলর ফিরোজ আহমেদ জুয়েল। কাজ শেষ করেই দুজনই ছুটে যান দলের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে। সেইসঙ্গে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানান। এরপর মাজারে কিছু সময় দাঁড়িয়ে থাকেন এবং ফাতেহা পাঠ ও প্রয়াত জিয়াউর রহমানের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া মোনাজাতও করেন তারা।
অথচ সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী কোনো রাজনৈতিক দল ও এর সহযোগী সংগঠনের সদস্য হতে পারবে না। সেইসঙ্গে দেশে ও বিদেশে কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ এবং সহায়তাও করতে পারবে না। কিন্তু এসব বিধিমালাকে বৃদ্ধাঙলি দেখিয়ে রাজনৈতিকদল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতার মাজারে গিয়ে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেছেন ওই সরকারি কর্মকর্তা।
এ প্রসঙ্গে বক্তব্য জানতে চাইলে বগুড়া বারের সাবেক সভাপতি ও আইনজীবি এড. গোলাম ফারুক বলেন, তিনি চাকরি বিধিমালা লঙ্ঘণ করেছেন। সেইসঙ্গে এটি একটি শাস্তিমূলক অপরাধও বটে। বিষয়টি স্থানীয় সরকারসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আমলে নিয়ে পৌরসভার ওই সচিবের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এদিকে ছবিটি ব্যাপক ভাইরাল হওয়ার পর পৌরসভার সচিব ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন। এজন্য গণমাধ্যম কর্মীদের ম্যানেজ করতে জোর তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন বলে সূত্রটি জানিয়েছে।
বিষয়টি সম্পর্কে বক্তব্য জানতে চাইলে শেরপুর পৌরসভার সচিব ইমরোজ মুজিব উত্তেজিত হয়ে উঠেন। তিনি কোনো মাজারে যাননি দাবি করে বলেন, এসব আপনারা (সাংবাদিকরা) পান কোথায়। ছবিটি যিনি ফেসবুকের মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছেন তাকেই জিজ্ঞেস করুন। এই সম্পর্কে আমার কোনো বক্তব্য নেই মন্তব্য করে ফোনের সংযোগ কেটে দেন।অপরদিকে পৌরসভার নয় নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফিরোজ আহম্মেদ জুয়েলের বক্তব্য জানতে তার ব্যক্তিগত মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দেওয়া হয়। কিন্তু ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
সুত্র আজকের শেরপুর